মানুষই বানরের পূর্বপুরুষ-Human is the ancestor of Monkey



সূধী পাঠক,মহান আল্লাহর সৃষ্টি কুলে নানা প্রজাতির অভুদ্বয় ঘটেছে; প্রাণ,নিস্প্রাণ সকল বস্তুর মধ্যে রয়েছে প্রজাতির সমাহার। আবার একই প্রজাতির মধ্যে রয়েছে নানা ভাগ; বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে রয়েছে নানা মিল। যেমন ধরুন, বাঘে বিড়ালের চেহারার মিল, মানুষ ও বানরের শুধু চেহারাই নয় বৈশিষ্টেরও অনেক মিল। এই মিল দেখে ভাবুকদের মনে প্রশ্ন জাগল বানর আর মানুষের মধ্যে কি প্রকৃত পক্ষেই কোন গাঠনিক মিল রয়েছে? শুরু হল চিন্তাভাবনা ও গবেষনা। নানা পরীক্ষা পর্যোবেক্ষণের পরে তারা বললেন বানরই হল মানুষের পূর্ব পুরুষ। বিতর্কের ঝড় উঠল বটে, কিন্তু বিজ্ঞান জগৎ সহজেই তা মেনে নিল। বিশেষ করে ডারউনের বিবর্তনবাদ প্রচারিত হওয়ার পর নানা যৌক্তিক কারণে বিজ্ঞানীরা মেনে নিলেন যে, বিবর্তনের ধারায় বানর থেকেই মানব প্রজাতির সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীদেরকে আরও বিশ্বাসী করে তুলেছে উভয় প্রজাতির কঙ্কাল। একসময় বিজ্ঞান আবিস্কার করল, বানরের পূরানো ফসিল, যা থেকে বিজ্ঞান সিদ্ধান্ত নিল পৃথিবীর বুকে এই প্রজাতির অভুদ্বয় ঘটেছে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগে। বিতর্কিত ধারনা অনেকটাই পাকাপোক্ত হয়ে গেল এই কারণে যে, মানব সভ্যতার ইতিহাস খুব বেশী দিনের নয়, বিংশতাব্দীর প্রথমদিকেও মানুষের ধারনা ছিল যে, মানব ইতিহাস খুব বেশী হলে ৩০ কি ৩৫ হাজার বছরের। বিভিন্ন লুপ্ত সভ্যতার প্রাপ্ত নিদর্শন থেকে মানুষ এমনটা অনুমান করত। বানর প্রজাতিকে তার চেয়েও অনেক পুরোনো অনুমান করে বিজ্ঞান তার সেই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, তার প্রমাণ স্বরূপ বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত বাণরের ফসিল পরীক্ষার ফলাফল থেকে এমন ধারণা করতে উদ্ভূদ্ধ হয়েছিল। আর তারই ধারাহিকতায় এক সময় বিজ্ঞান বানরকে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগেকার প্রজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিল। সময়ের ক্রম পরিবর্তনে দেখাগেল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্ত মানুষের ফসিল পরীক্ষায় মানব ইতিহাস ক্রমশঃ দীর্ঘায়িত হতে লাগল, দেখা গেল কোথাও ৫০ হাজার বছরের পুরানে, কোথাও ৭০ হাজার বছরের পুরানো আবার কোথাও লক্ষ বছরের পুরানো ফসিল পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বিজ্ঞান স্থির হতে পারলোনা মানুষের প্রকৃত বয়স কত; কিন্তু তাই বলে মানুষকে বানরের বয়োজ্যাষ্ঠও ভাবতে পারলোনা।এমনি ভাবে মানুষের প্রকৃত ইতিহাস রহস্যের মধ্যেই লুকিয়ে রইল। কিন্তু বিজ্ঞানীদের মধ্যে আসল সত্য নিয়ে দুদোল্যমানতার জন্মনিল- মানুষ আলাদা কোন প্রজাতি কিনা? এই সত্য উদঘাটনের জন্যে চলতে লাগলো জোড় প্রচেষ্ঠা।দেখা গেল বানর আর মানুষের ডি এন এর মধ্যে প্রচুর মিল; বিজ্ঞান যেন কুঞেলিকার মধ্যে পড়ে গেল।আসুন এ বিষয়ে আমরা বিজ্ঞানের কিছু ধারনা জেনে নেই।
শিমপাঞ্জির জিন চক্রে ৮৮৫৯ টি, ডি এন এ অনুক্রমে প্রায় ১.৯ মিলিয়ন খার জোড়ের সাথে মানুষের অনুরূপ সংখ্যক এন এর অনুক্রমের সাথে তুলনা করে দেখা গেছে যে, গড় পার্থক্য অত্যান্ত কম, যা প্রায় ১.২৪%। প্রায় ১.২৪%। মনে করা হচ্ছে শিমপাঞ্জী ও মানুষ একই পূর্ব পুরুষের বংশধর এবং ৪.৬-৬.২ মিলিয়ন বছর আগে এই দুই প্রজাতির অভুদ্বয় ঘটেছে। ফলে মানুষের জিনে নিউইক্লিওটাইড গবেষণায় অননুরূপ প্রতিস্থাপনের জন্যে শিমপাঞ্জি হল সর্ব উত্তম ; কারণ এই দুটি প্রজাতির মধ্যে রয়েছে ঘণিষ্ট মিল। দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ে গবেষণা চলছে প্রথম দিকে ব্যবধান ১.৬% থাকলেও অতি সম্প্রতি তা ১.২৪% এ নেমে এসেছে।
সূধী পাঠক আসুন, এবার আমরা আরও কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নেই,
টিম হোয়াইট, বারহেন আসফহ্ এবং জেন সূয়া (Tim White, Berhane Asfaw, and Gen Suwa) আফ্রিকায় দীর্ঘদিন ফসিল সংগ্রহ ও তা পরীক্ষা নীরিক্ষার কাজে আছন, তারা ১৯৯৩ সালে হঠাৎ করে এক উল্লেখ যোগ্য আবিস্কার করে বসেন; তারা ইথিওপিয়ায় একটি হোমিনিড স্কাল বা মাথার খুলি, চোয়াল, বাহুর হাড়ও কিছু দাঁত খুঁজে পান,যা পরীক্ষা করে মোটামুটি ৪.৪ মিলিয়ন বছরের পুরানো বলে সনাক্ত করেন। একে এ পর্যোন্ত আবিস্কৃত ফসিলের মধ্যে সবচেয়ে পুরানো মানব প্রজাতির ফসিল বলে গণ্য করা হয়। ১৯৯৪ সালে এই ফসিল আবিস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং এই প্রজাতির নাম করণ করা হয় অষ্ট্রালোপিথিকাস র‌্যামিডাস (Australopithecus ramidus) যা পূর্বের আবিস্কৃত ১.৭৫ মিলিয়ন বছরের পুরানো অষ্ট্রালোপিথিকাস বায়োসি (Australopithecus boisei ), ও ৩ মিলিয়ন বছরের পুরানো লুসির (Lucy) প্রজাতি। এই ঘোষনার পরেও গেবেষকদের মনে একে মানব প্রজাতির বলে সন্দেহ থেকে যায় এবং উপযুক্ত যুক্তির অভাবে তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আরডিপিথিকাস র‌্যামিডাস (Ardipithecus ramidus) যার প্রজাতি ভিন্ন তবে এই পরিবর্তনের কারণ তারা ব্যাখ্যা করেনি কারণ এই প্রাণীটি দুই পাঁয়ে ভর দিয়ে হাঁটা নিয়ে তাদের সন্দেহ ছিল;তারা মনে করলেন এই প্রাণীটি আফ্রিকার পুরানো বানর ও অস্ট্রালোপিথেকাস এর যোগসূত্র। তাদের আকৃতি সম্ভবত উভয় প্রজাতির সাথে মিল ছিল। এই আবিস্কার এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করলো। বিজ্ঞানীরা মনে করলেন সম্ভবত এটি বানর ও মানুষের মধ্যকার মিসিংলিঙ্ক; কিন্ত তাদের প্রাক্কলিত হিসেব অনুযায়ী বিষয়টা হয়ে যায় উল্টো; কারণ বাণর যদি ৩.৫ মিলিয়ন বছরের পূরানো হয় তবে মানুষ ৪.৪ মিলিয়ন বছরের পুরানো; আর এই তথ্য মানুষকে বাণরের পূর্ব পুরুষ হিসেব সনাক্ত করে আলোচনা চলতে থাকে- অরডিপিথিকাস টি মানুষ প্রজাতির কি না, এটি দুই পায়ে হাঁটতো কি না,,, ইত্যাদি। বিবিজ্ঞানীদের এই দোদুল্যমানতার অবসান ঘটলো ১৯৯৫ সালে মেভ লিকি ও এলান ওযাকার যখন কেনীয়াতে আরেকটি নতুন ফসিল উদ্ধার করলেন; যার নামকরণ করা হল অস্ট্রালোপেথিকাস এনামেনসিস (Australepithecus anamensis)। এই ফসিলটির বয়স প্রায় ৩.৯ থেকে ৪.২ মিলিয়ন বছর। গবেষণায় পরিস্কার ভাবে বুঝা গেল যে প্রানিটি দু’পায়ে ভর দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে হাঁটতো ও কাষ্ঠ সমৃদ্ধ অঞ্চলে বাস করতো । সাম্প্রতিক এই আবিস্কার হয়তো একদিন মানুষকে তার মূল খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
সূত্র-ওয়ভসাইট ` A science odyssey
সূধী পাঠক,বিজ্ঞানের মূল দাবীর প্রেক্ষিতে ধর্মানুরাগীদের মধ্যে বিতর্কের ঝড় উঠে, তাদের দাবী কোন উপায়েই বানর মানুষের পূর্ব পুরুষ হতে পারেনা, মহান আল্লাহ প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ভাবে তৈরী করেছেন। বিজ্ঞান মানতে নারাজ, বিজ্ঞানীরা উঠেপড়ে লাগলেন প্রমানের জন্যে কারণ ১৫শ শতাব্দীর মাঝামাঝি ডারউইনের এই তত্ত্ব প্রকাশিত হওয়ার সময় বিজ্ঞানের হাতে তার স্বপক্ষে তেমন কোন প্রমাণ ছিলনা; তখনো বিজ্ঞান ডি এন এ জ্ঞান অর্জন করতে পারেনি। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ডি এন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর বিতর্কের মোড় ঘুরে গেল, ক্ষোদ বিজ্ঞানীরাই বলতে লাগলেন যে, প্রাকৃতিরক নির্বাচনে ডি এন এ কোন উপায়েই বিবর্তীত হতে পারেনা। এটি তৈরী হয় সুপরিকল্পিত কাঠামো অনুযায়ী। অনেক বিজ্ঞানী তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তারা গবেষনা করে বানরকে মানুষের পিত্রিপুরুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে লেগে রইলেন। উভয় প্রজাতির ডি এন এর মিল খুঁজতে গিয়ে তারা ক্রমান্বয়েই তাদের লক্ষের কাছা কাছি এসে পৌঁছুতে লাগলেন। এক সময় দেখা গেল এই দুই প্রজাতির মধ্যে তেমন কোন পার্থক্যই নেই। তারা সোল্লাসে তাদের দাবীর স্বীকৃতি দিয়ে দিলেন। ধর্মানুরাগীরা বেকায়দায় পড়লেও তারা তাদের দাবীর স্বপক্ষেই রয়ে গেলেন। বিশ্বাসের হাতিয়ার হিসেবে পরিচিত বিজ্ঞানের দাবীকে মেনে নিলেননা। কারণ পবিত্র কোরআন মানব সৃষ্টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে। মহান আল্লাহ বিজ্ঞানের এই তত্ত্ব প্রচারে প্রায় ১৪ শত বছর আগেই মানব সৃষ্টি এবং তার বংশ বিস্তারের পরিপূর্ণ ইতিহাস বর্ণনা করে রেখেছেন। যে গুলোকে আধুনিক বিজ্ঞান পর্যোন্ত অস্বীকার করতে পারছেনা। মহান আল্লাহ তাঁর বাণীতে পরিস্কার ভাবে জানিয়েছেন যে তিনি মানুষকে কাঁদামাটি থেকে তৈরী করেছেন।
আমরা উপরের আলোচনা থেকে দেখলাম যে, এ পর্যোন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মানুষের বয়স প্রায় ৪.৪ মিলিয়ন বছর। বিজ্ঞানের সেই পুরানো দাবী বিজ্ঞানেরই আবিস্কৃত তথ্যের দ্বারা মিথ্যে প্রমানিত হয়ে যায়। বিজ্ঞান আরও দাবী করেছিল প্রাথরের যুগ থেকে এ পর্যোন্ত আসতে মানুষকে খুব বেশী সময় নষ্ট করতে হয়নি। বিজ্ঞান এও দাবী করেছিল যে প্রাকৃতিক নির্বাচণের মাধ্যামে বিবর্তনের ধারায় বানরের একটা দল এক সময় মানুষ হয়ে যায় এবং তার বংশগতি চলতে চলতে বর্তমানে এসে পৌঁছেছে। বিজ্ঞানের এই দাবীর পিছনে তারা বহু বৈজ্ঞানিক কারণ দেখিয়েছেন, যথেষ্ট যুক্তি প্রমানের সাহায্যে তাদের বক্তব্যকে সত্য বলে প্রমান করতে চেয়েছেন, তারা বানর ও মানুষের ডি এন এ পরীক্ষা করে প্রায় ৯৯ শতাংশ মিল খুঁজে পেয়ে যখন তাদের দাবীর স্বপক্ষে একশত ভাগ প্রমাণ তুলে ধরতে চাইলেন, ঠিক তখনই এই আবিস্কার ইতিহাসের পাঁতাকে উল্টে দিয়ে বিষ্ময়কর ভাবে তুলে ধরলো যে, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’। বিজ্ঞান আজ বিনম্র স্বরে বলছে,বানর ও মানুষের পিতৃ পুরুষ একই। অষ্ট্রালোপিথিকাস বায়োসি এর ফসিল আবিস্কারের পূর্বে বানর ওমানুষের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল তা নড়বড়ে হয়ে পড়লো; এই ফসিল দিয়ে লিঙ্ক গ্যাপের শূণ্যতাকে পূরণ করা গেলনা এ কারণে যে, এই ফসিলের বয়স বানরের চেয়ে বেশী। ডারউইনের বিবর্তনবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বিজ্ঞান এ দাবী করে আসছিল। যদিও বিশ্বাসীদের মনে বিজ্ঞানের এই দাবী রেখাপাত করতে পারেনি,তথাপি নিরপেক্ষ মানুষের দল বিজ্ঞানের দিকেই ঝুকে পড়ছিল বেশী, কারণ বিজ্ঞান কখনো মিথ্যে কথা বলেনা। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি, তবে তাদের গবেষণা পূর্ণাঙ্গ রূপ না পেতেই তারা শুধুমাত্র পর্যোবেক্ষণ লব্দ ফলাফল থেকে মন্তব্য করে ছিল। আজকের বিজ্ঞান সর্বশেষ যে ধারণা দিচ্ছে তার স্বপক্ষে পবিত্র কোরআন ১৪০০ বছর আগেই পরিপূর্ণ ধারণা দিয়ে রেখেছে। মহান আল্লাহ সূরা আল মুমিনুন এর ১২ নং আয়াতে বলছেন,
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ مِن سُلَالَةٍ مِّن طِينٍ
২৩:১২ আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।
ثُمَّ جَعَلْنَاهُ نُطْفَةً فِي قَرَارٍ مَّكِينٍ
২৩:১৩ অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি।
সূরা আন নিসার ১ম আয়াতে মহান আল্লাহ লেছেন,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيرًا وَنِسَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا
৪:১ মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা করে থাক এবং আত্নীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন।
মানুষ সৃষ্টি ও তার বংশবিস্তারের পূর্ণ ইতিহাস কত সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। আমরা বিজ্ঞানের ধারণা মতে ডি এন এ’র আলোচনায় দেখেছি যে, পরিবেশের প্রভাবে ও প্রাণীর মনঃষ্কামনায় কোনভাবেই ডি এন এ স্থিত জিন পরিবর্তীত হয়ে প্রজাতির পরিবর্ণ ঘটতে পারেনা। প্রতিটি প্রজাতি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাঝে সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞান আরও বলছে কাঁদা মাটিতে বিভিন্ন আর এন এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে; আর অধিকাংশ প্রজাতিই জলজ অঞ্চল ঘিরে আবিভূত হয়েছে। পবিত্র কোরআনের ধারণা মতে দেখা যাচ্ছে মানুষের কোন পূর্ব পুরুষ নেই; সম্পূর্ণ আলাদা প্রজাতি রূপেই আবিভূত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল বিজ্ঞান তাহলে কিশের ভিত্তিতে দাবী করছে মানুষের পূর্ব পুরুষ বানর?
সূধী পাঠক,সকল বিতর্কের মাঝে একটা কথা আমাদেরকে ভূলে গেলে চলবেন যে, বিজ্ঞান সত্যের সাধক,বিজ্ঞানের কোন ধারনা আমাদের সাধারনের আবেগ অনুভূতি দিয়ে তৈরী হয়না। তাদের যেকোন পরিকল্পনা পরীক্ষা নীরিক্ষার মধ্য দিয়ে তত্ত্ব হয়ে উঠে। এ ক্ষেত্রেও তাদের কাছে রয়েছে যথেষ্ট যৌক্তিক ধারনা; বিশেষ করে ডারউইনের চিন্তাধারা মানুষকে যখন বিবর্তনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল তখন বিজ্ঞানীরা বানর ও মানুষের দৈহিক কাঠামোর সাদৃশ্যতা থেকে উভয় প্রজাতির ঘনিষ্টতা অনুমান করে নেয়। তারপর শুরু হয় পরীক্ষা নীরিক্ষা, বিংশ শতাব্দীতে এসে ডি এন এ আবিস্কারের মধ্য দিয়ে এই গবেষণার অগ্রযাত্রা ত্বরাণ্বিত হয়; হালে এসে আবিস্কার করে বসে যে, বানর ও মানুষের ডি এন এ প্রায় হুবহু মিল। বিবর্তন বাদীরা হাতে চাঁদ পেয়ে গেল, বানর আর মানুষ একই বংশোদ্ভূত বলতে আর কোন বাধা রইলোন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াল বিজ্ঞানের ফসিল আবিস্কার । বিজ্ঞান যখন মাটি খুঁড়ে ৪.৪ মিলিয়ন বছরের পুরানো মানব দেহের হাড়গোড় খুঁজে পেল, তখন কে কার বংশধর এ নিয়ে খোদ বিজ্ঞানই সমস্যায় পড়ে গেল। এখন বানরকে আর সেই মর্যাদায় ভূষিত করা যাচ্ছেনা এই কারণে যে, ৪.৪ মিলিয়ন বছরের চেয়ে পুরানো কোন বানরে ফসিল এখনও খ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পাওয়া যাবেনা বলেও হলফ করে কিছু বলা যায়ন। সে যাই হোক; এবার লক্ষ্য করুন পবিত্র কোরআনের বিষ্ময়কর দু’টি
 টিউনার-সাদ হাসান
মানুষই বানরের পূর্বপুরুষ-Human is the ancestor of Monkey মানুষই বানরের পূর্বপুরুষ-Human is the ancestor of Monkey Reviewed by Unknown on 2:02 am Rating: 5

No comments